STRESS নামে ইংরেজিতে এক চরম বিরক্তিকর শব্দের সাথে আমরা সবাই খুবই পরিচিত। এই STRESS এর সহজ সরল বাংলা অর্থ হচ্ছে চাপ।

কিন্তু আমার অভিধানে এর অর্থ হচ্ছে ফালতু আপদ। কেন? কারণ এই আপদ সম্পূর্ণ আমাদের নিজস্ব সৃষ্টি। এটার কোন অস্তিত্বই দেহে থাকে না। আমরাই এর সৃষ্টিকর্তা।

বুঝিয়ে বলি।

সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে সবচেয়ে দামী যে বস্তুটি উপহার দিয়ে ধন্য করেছেন তা হল আমাদের BRAIN বা মগজ। এর মূল্য এখনও সঠিকভাবে কেউ নিরুপন করতে পারে নি (ভবিষ্যতেও পারবে কিনা সন্দেহ)।

তো মহান সৃষ্টিকর্তা এই ব্রেইনের মাধ্যমে মানবকুলের সমস্ত সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করে রেখেছেন।

অর্থাৎ যত সমস্যাই আসুক আপনার ব্রেইন আপনাকে এর সমাধান এনে হাজির করতে বাধ্য।

সমস্যাটা হয় তখনই যখন আপনি সমাধান খুঁজতে গিয়ে ব্রেইন মহাশয়কে তার সিস্টেমের বাইরে গিয়ে জোর করে  সমাধান খুঁজতে বাধ্য করেন। কারণ ব্রেইনকে কাজ করানোর কিছু সংবিধিবদ্ধ তরীকা আছে।

আর আপনি এই তরীকা না মানার কারণে ব্রেইন মহাশয় যখন বিরক্তি প্রকাশ করে কিঞ্চিত কাজ করা বন্ধ করে দেন তাহাকেই তখন আমরা  STRESS বা চাপ বা আমার ভাষায় ফালতু আপদ বলছি।

আশা করি কিছুটা হলেও বুঝেছেন। আরও বুঝতে YOUTUBE এ ঢুঁ মারতে পারেন।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এত প্যাঁচাল না পেরে এই ফালতু আপদকে বিদেয় করার উপায় কি?

আমি কিন্তু এই ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ না। তবে আমার একটা থিউরি আছে যা প্রায় সময় আমি প্রয়োগ করে সুফল পাই।

যদি জানতে চান তবে নিচের দিকে তাকান, নয়ত কেটে পড়ুন। এতক্ষণ আমার প্যাঁচাল শোনার (আসলে পড়ার😉) জন্য ধন্যবাদ।

 

১- আমি দেখেছি যখনই অন্যের কোন অর্জন নিয়ে চিন্তা করা শুরু করেছি যা আমি এখনও অর্জন করতে পারিনি, তখনই চাপ আর চাপের বাপ দুটোই আমাকে পেয়ে বসে। অথচ আমার যা আছে তা-ও কি কম। অন্যের যা অর্জন তা অন্যের মতই। আমারটা আমাকে আমার মতই অর্জন করার জন্য চেষ্টা করতে হবে। সোজা হিসেব। কিন্তু ছোট বেলা থেকে আমাদেরকে যেহেতু সবসময় অন্যের অর্জন দেখিয়ে বড় হতে বলা হয়েছে, মূল সমস্যাটা কিন্তু ওই গোঁড়াতেই। তাই এখন যেহেতু আমি বুঝে গেছি আমি কি পারি আর কি চাই, কাউকেই কেয়ার করার কোন দরকার নাই!!

 

২- এর পরের কারণটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের বাইরে আমরা যাদের সাথে প্রতিদিন চলাফেরা করি তাদের আচরণ ও কথাবার্তা আমাদেরকে খুবই প্রভাবিত করে। আর আমার চাকরিজীবনে আমি খুব কমই লোক পেয়েছি যারা নেতিবাচকতা থেকে নিজেদের দূরে রাখতে পেরেছে (আমিও কি পেরেছি??)।

আর এই নেতিবাচক সংস্পর্শ খুব সহজেই ব্রেইনকে দুর্বল করে ফেলে। যার ফলশ্রুতিতে যে কোন অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে ব্রেইন অসংবেদনশীল হয়ে পরে আর আমরা “চাপে” পরি। কারণ মনে রাখবেন ব্রেইনেরও কিন্তু খোরাক আছে। আর তা হল ইতিবাচক আলোচনা, ইতিবাচক চিন্তা, অধিক জ্ঞান আহরণ।

এছাড়াও ব্রেইনকে চাঙ্গা রাখার অনেক রকমের পদ্ধতি আছে যেগুলো জানা থাকলে চাপের বাপও আপনাকে কিছু করতে পারবেনা। আমি দুই একটা জানি যা পরে কোন একসময় শেয়ার করব।

 

৩- সর্বশেষ কারণটা হল লক্ষ্যহীন জীবন। আমাদের বেশিরভাগ মানুষেরই জীবনে লক্ষ্য হচ্ছে অন্যের অধীনে চাকরী করে মিলিওনিয়ার হওয়ার অসম্ভব স্বপ্ন দেখা। কিন্তু মাস শেষে ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ আর অন্যান্য খরচ সামলাতে গিয়ে অবস্থা তেরোটা। আর এই খরচ মেটাতে না পেরে নিজের উপরে অসীম যে বোঝাটা আসে সেটা চাপ ছাড়া আর কি? আমিও এরকমটাই ছিলাম। কিন্তু যেদিন থেকে চাকরী ছেড়ে উদ্যোক্তা হওয়ার দুর্দান্ত লক্ষ্য মাথায় চাপিয়েছি, আর প্রতিনিয়ত নিজেকে বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজেকে দক্ষ করেছি, সেদিন থেকে যত চাপই আসুক নিজেকে সামলে নিতে শিখেছি।

 

পরিশেষে কিছু ছোটখাটো টিপস যা আপনাকে চাপ সামলাতে অনেক সাহায্য করবে কিন্তু চটজলদি কিছু আশা করবেন না।  কেবলমাত্র ধারাবাহিকভাবে পালন করতে পারলেই আপনি এর ফল পাবেন।

 

  •       সবসময় কৃতজ্ঞ থাকুন।
  •       সবসময় মুখে হাসি ঝুলিয়ে রাখুন।
  •       অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু হলেই প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না। সুস্থির হয়ে তারপর সিদ্ধান্ত নিন।
  •       কারও কোন কথাতে অন্য কাউকে বিব্রত করবেন না। আগে খবর নিন কথাটা কতোটুকু সত্য।
  •       কানকথা আর নেতিবাচকতা এবং এগুলো যারা বলে তাদের অবশ্যই এড়িয়ে চলুন।
  •       জীবনে বিশাল স্বপ্ন দেখতে শিখুন।
  •       বইকে পরম বন্ধু বানান।
  •       আর অবশ্যই নিয়মিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজেকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখার চেষ্টা করুন।

 

ধন্যবাদ।

Website | + posts

𝗖𝗛𝗜𝗘𝗙 𝗠𝗢𝗩𝗘𝗠𝗘𝗡𝗧 𝗠𝗔𝗞𝗘𝗥 and Corporate Trainer at Corporate Academy, 𝗣𝗮𝘀𝘀𝗶𝗼𝗻𝗮𝘁𝗲 𝘁𝗼 𝗵𝗲𝗹𝗽 𝗽𝗿𝗼𝗳𝗲𝘀𝘀𝗶𝗼𝗻𝗮𝗹𝘀 𝗳𝗶𝗻𝗱𝗶𝗻𝗴 𝘁𝗵𝗲𝗶𝗿 𝗯𝗶𝗴𝗴𝗲𝗿 𝗽𝘂𝗿𝗽𝗼𝘀𝗲 𝗼𝗳 𝗹𝗶𝗳𝗲✳️

Leave a Reply

Your email address will not be published.