আপনি কি জানেন যে সম্পূর্ণ আপনার ইচ্ছাতেই আপনি রাগ করেন?

ধরেন আপনি বাসে কোথাও যাচ্ছেন। বাসের কন্ডাকটর (যে ভাড়া নেয়) সবার সাথেই একটু বাজে আচরণ করছে। দেখা গেল যাত্রীদের মধ্যে হঠাৎ কেউ একজন তাকে বাজে বকে বসল। ব্যাস, লেগে গেল তুমুল ঝগড়া। এরপর ব্যাপারটা অনেকদূর গড়াতেও আমরা দেখেছি।

আমরা সবাই জানি যে বাসের কন্ডাকটররা এমনই হয়। ওদেরতো আর এত প্রফেসনালিসম শেখার দরকার নাই, তাই না। তো এসব জানার পরও আমি যখন তার আচরণে রেগে যাব আর বাজে পরিস্থিতির শিকার হব তখন কিন্তু এর জন্য আমার সহ্য ক্ষমতার ঘাটতিই দায়ী। যার ফলে আমি রেগে যাচ্ছি।
এরকম অসংখ্য উদাহরণ দেওয়া যাবে যেখানে একটু চিন্তা করলেই দেখা যাবে রেগে যাওয়াটা কেবলই নিজের একটা ব্যাক্তিগত সিদ্ধান্ত। আসলে শুধু রেগে যাওয়াই নয়, হতাশ হওয়া, বিব্রত হওয়া, আফসোস করা, মন খারাপ করা এরকম আরও অসংখ্য নেতিবাচকতা সম্পূর্ণ আমাদের সিদ্ধান্তেই বাস্তবায়িত হয়।

যাই হোক, রাগকে নিয়ন্ত্রণ করার একটি দারুণ থিউরি হল-প্রকাশ (expressins), দমন (suppressing) ও স্থির (calming).

প্রকাশ-

মনে রাখবেন, রাগ কিন্তু আপনার চরিত্রের একটি স্বাভাবিক আচরণ। এটিকে এড়ানোর কোন উপায় নেই। অর্থাৎ এটি প্রকাশ পাবেই বা এটিকে প্রকাশ করতেই হবে। একজন সচেতন ব্যাক্তি হিসেবে আপনাকে যেটি করতে হবে তা হল এই প্রকাশকে যথাসম্ভব পজিটিভ করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে আপনি কি চান, কেন চান, কিভাবে চান এবং কিভাবে অন্যকে আঘাত না করে আপনার কার্যসমাধা করতে হবে। ছোট্ট একটা উদাহরণ দেওয়া

যাক-

ধরেন আপনার কোন কলিগ আপনাকে নানাভাবে বিরক্ত করে, বিশেষ করে কাজের সময়ে যার ফলে আপনার খুবই রাগ হয় কিন্তু তাকে কিছু বলতেও পারেন না। এখন এই পরিস্থিতিতে আপনি যদি একটু চিন্তা করেন যে আসলেই কি উনি আপনাকে ইচ্ছে করে বিরক্ত করছেন? নাকি উনি আপনার সাথে কথা বলে নিরাপদ বোধ করেন যার জন্য অন্য কাউকে বিরক্ত করেন না।
এরকম ক্ষেত্রে আপনি যদি উনাকে বাইরে কোথাও কফি খেতে খেতে আপনার অবস্থাটা ব্যাখ্যা করেন এবং সেই সাথে যদি এটাও বলেন যে আপনি উনাকে কতটা সম্মান ও পছন্দ করেন যে আপনি চান না উনি কোন কারণে আপনার কথায় বিব্রত হন। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে কিন্তু এই ফর্মুলায় কাজ হয়।
তাহলে দেখুন, আপনি আপনার রাগের প্রকাশও করলেন আবার কলিগের সম্মানহানিও করলেন না। উল্টো ওই কলিগ আপনার প্রতি আরও অনুরক্ত হয়ে বিভিন্ন কাজে আপনার সহায়ক ভুমিকায় অবতীর্ণ হবে।

দমন-

রাগ কিন্তু দমন করা যেতে পারে, এবং তারপর রূপান্তরিত বা পুনর্নির্দেশ করা যেতে পারে। এটি ঘটে যখন আপনি আপনার রাগ ধরে রাখেন, এটি সম্পর্কে চিন্তা করা বন্ধ করেন এবং ইতিবাচক কিছুতে মনোনিবেশ করেন। উদ্দেশ্য হল আপনার রাগকে দমন করা এবং এটিকে আরও গঠনমূলক আচরণে রূপান্তর করা। এক্ষেত্রে একটি একটি দারুণ কউসল হল যখনই রাগ আসবে তখনই মনে মনে.৭ বার বলুন, “আমি রাগব না”। দেখবেন আপনি চাইলেও আর রাগ করতে পারবেন না। কারণ আপনার ব্রেইনকে আপনি ইতিমধ্যেই আপনার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন।
এই কাজটি কখন করতে হবে জানেন? রিলেশনশিপের ক্ষেত্রে এই নিয়ন্ত্রণ খুবই জরুরী। সেই সাথে আপনি যদি চাকরিজীবী বা উদ্যোক্তা হন তবে তো এই কৌশল অবশ্যই অবলম্বন করতে হবে।
তা নাহলে কিন্তু অনেক বড় বিপদ হতে পারে যার ফলশ্রুতিতে আপনাকে অনেক পস্তাতে হতে পারে।

আমাদের বেশীরভাগ রাগের কারণ হল সহ্য ক্ষমতার ঘাটতি। অথবা আমরা যদি অন্য একটি কারণে বিরক্ত থাকি তবে তা আরেক ইস্যুতে বা অন্যের উপর অত্যন্ত ঠুনকো কারণে ঝেড়ে ফেলি। তাই

আপনি যে রেগে যাচ্ছেন তা কাউকে বুঝতে না দেওয়াটাই হবে সবচেয়ে কার্যকর সমাধান।

Website | + posts

𝗖𝗛𝗜𝗘𝗙 𝗠𝗢𝗩𝗘𝗠𝗘𝗡𝗧 𝗠𝗔𝗞𝗘𝗥 and Corporate Trainer at Corporate Academy, 𝗣𝗮𝘀𝘀𝗶𝗼𝗻𝗮𝘁𝗲 𝘁𝗼 𝗵𝗲𝗹𝗽 𝗽𝗿𝗼𝗳𝗲𝘀𝘀𝗶𝗼𝗻𝗮𝗹𝘀 𝗳𝗶𝗻𝗱𝗶𝗻𝗴 𝘁𝗵𝗲𝗶𝗿 𝗯𝗶𝗴𝗴𝗲𝗿 𝗽𝘂𝗿𝗽𝗼𝘀𝗲 𝗼𝗳 𝗹𝗶𝗳𝗲✳️

Leave a Reply

Your email address will not be published.